পুলিশ ও ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ

পুলিশ, ইন্টারপোল বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন

পুলিশ


চিত্র, বিপদের বন্ধু
পুলিশ অর্থ কি?
একটি রাষ্ট্রের বেসামরিক বাহিনী, অপরাধ প্রতিরোধ ও সনাক্তকরণ এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়ী। পুলিশ সাধারণত জনসাধারণের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, আইন প্রয়োগ করা এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং তদন্তের জন্য দায়ী। এই ফাংশনগুলি পুলিশিং নামে পরিচিত। যেমন "কেউ খুন হলে পুলিশকে জানাতে হবে"।

স্থানীয় পুলিশের প্রধান কাজ কি কি?

আইন প্রয়োগের অংশ হিসাবে, পুলিশ অফিসারদের চারটি প্রধান দায়িত্ব রয়েছে:
  • আইন প্রয়োগ করা,
  • অপরাধ প্রতিরোধ করা,
  • জরুরী পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়া এবং
  • সহায়তা পরিষেবা প্রদান করা।

  • বাংলাদেশ পুলিশের সংগঠন গুলো কি

    বাংলাদেশ পুলিশ সংগঠন। বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান হলেন মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি)। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ সংগঠন বিভিন্ন ইউনিট বা ভাগে বিভক্ত।

    ইউনিটসমূহ:

  • পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (পুলিশ সদরদপ্তর)
  • রেঞ্জ পুলিশ
  • মেট্রোপলিটন পুলিশ
  • বিশেষ শাখা (এসবি)
  • অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)
  • আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)
  • র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)
  • রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)
  • শিল্প পুলিশ
  • হাইওয়ে পুলিশ
  • পুলিশ ইন্টারনাল ওভারসাইট (পিআইও)
  • পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)
  • ট্রেনিং ইন্সটিটিউটস
  • ট্যুরিস্ট পুলিশ
  • নৌ পুলিশ
  • এন্টি টেররিজম ইউনিট
  • বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণত কি কাজ করে

    বাংলাদেশ পুলিশ বাংলাদেশের একমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা যার সদস্য ২,১২,৭২৪ । সংস্থাটি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান অধিকর্তাকে বলা হয় মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি)। বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণত যে কাজগুলো করে থাকে তা হল:

  • অপরাধ ব্যবস্থাপনা / পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট / বেসিক পুলিশিং / আইন প্রয়োগ: গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। অপরাধ ঘটনা প্রতিক্রিয়া। তদন্ত। প্রতিপাদন। পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। প্রসিকিউশনকে সহায়তা করা।
  • অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা: নিরাপত্তা টহল। নিরাপত্তা ওয়াচডগ। ভিভিআইপি নিরাপত্তা। কেপিআই নিরাপত্তা। জাতীয় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা (ধর্মীয় উৎসব, মেলা, ইজতেমা, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি)।
  • সামাজিক সংহতি: সচেতনতা বৃদ্ধি (প্রশিক্ষণ, সমাবেশ, প্রদর্শনী, মিডিয়া কভারেজ, স্কুল পরিদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে)। কমিউনিটি পুলিশিং। মানবিক প্রচেষ্টা (শীতকালীন বস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা ইত্যাদি)। সামাজিক ইভেন্টে অংশগ্রহণ (মেলা, সহায়তা ইত্যাদির মতো ইভেন্টে অংশীদার হওয়া)। ওপেন হাউস দিবস পালন। রক্তদান। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার।
  • আন্তর্জাতিকভাবে পারফর্ম করা: ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (ইন্টারপোল, সার্কপোল ইত্যাদি) এড্রেসিং। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন।
  • পুলিশের সিআইডি, পিবিআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং ডিবি-এর কাজের মধ্যে পার্থক্য কী?

    সিআইডি হলো পুলিশের সবচেয়ে পুরনো এবং প্রধান তদন্তকারী শাখা। সবচেয়ে কঠিন এবং স্পর্শকাতর কেসগুলো সিআইডি তদন্ত করে, যেমন দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাক। সাইবার ক্রাইম এবং ফরেনসিকও সিআইডির এখতিয়ারে পড়ে।

    পিবিআই এর কাজও সিআইডির মতোই, তবে এর আকৃতি ও ব্যাপ্তি আরো বড়। পিবিআই প্রথম দিকে কোল্ড কেস, অর্থাৎ পুরনো অমিমাংসিত রহস্যজনক কেসের তদন্ত করলেও, এখন নতুন কেসেরও তদন্ত করে। সিআইডির সাথে এর প্রধান পার্থক্য হলো এটি জেলা পর্যায়ে উপস্থিত, সিআইডির মত হেডকোয়ার্টার কেন্দ্রিক নয়।

    বর্তমানে সিআইডি অনেকটাই টেকনিক্যাল তদন্ত করে, অপরদিকে পিবিআই ট্র‍্যাডিশনাল হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন করে থাকে।

    ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের কাজও তদন্ত করা, মূলত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান এবং টেররিজম জাতীয় অপরাধ ডিল করে। সকল জেলা পুলিশের আলাদা ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ থাকে, মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি বিভাগে আলাদা ডিবি ইউনিট থাকে। গোয়েন্দা পুলিশ বলতে মূলত এই ডিবিকেই বোঝায়।

    এই তিনটির সাথে স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা এসবির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এটি তদন্তকারী সংস্থা বা ইউনিট নয়, এটি একটি গোয়েন্দা সংস্থা, অর্থাৎ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। বাংলায় সবগুলোই গোয়েন্দা বিভাগ হলেও, ইন্টেলিজেন্স আর ইনভেস্টিগেশন দুটো একেবারেই ভিন্ন কাজ। এসবির কাজ দেশের জাতীয় নিরাপত্তার অভ্যন্তরীণ দিক নিয়ে। দেশের ভিতর সক্রিয় বিদেশি ইন্টেলিজেন্স অফিসারদের শনাক্ত করা, গতিবিধির নজর রাখা এবং তাদের স্পাইদের শনাক্ত, দমন এবং পাল্টা ব্যবহার করা — এগুলোকে বলা হয় কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স। এর জন্য সব বিদেশি সংস্থা, এনজিও এবং কুটনীতিকদের উপর তারা নজর রাখে। এছাড়াও যেকোনো গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগের তদন্ত করাও এসবির দায়িত্ব। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স, ভিআইপি সিকিউরিটি, পলিটিকাল ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদিও এসবির দায়িত্ব। জেলা এবং শহর সব পর্যায়েই এসবির কার্যক্রম রয়েছে।

    সিআইডি (Criminal Investigation Department): সিআইডি বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ এর একটি বিশেষায়িত শাখা। এই শাখাটি জরুরী অপরাধসমূহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেটার ভিত্তিতে তদন্ত করে। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসের অর্থায়ণ, অর্থ পাচার, সাইবার ক্রাইম এবং সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বদা সচেষ্ট থাকে বাংলাদেশ সিআইডি। বড় অপরাধসমূহের সুরাহা করতে দেরী হলে সিআইডি সঠিক তদন্ত করে কম সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বদ্ধপরিকর। এছাড়াও সিআইডি, বাংলাদেশ পুলিশকে প্রয়োজনে ফরেন্সিক সাপোর্টও প্রদান করে থাকে।

    পিবিআই (Police Bureau of Investigation): বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা হচ্ছে 'পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন। এই সংগঠনটির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর মতো একটি সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। পিবিআই এমন সব জটিল মামলাসমূহের তদন্ত করে যার স্পস্ট ধারণা বা উদ্দেশ্যগুলির অভাব রয়েছে। নেভাল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের নিজস্ব গোয়েন্দা শাখা আছে যেগুলো পানিপথের নিরাপত্তা, ট্যুরিস্ট স্পট এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনের নিরাপত্তা প্রদান করে।

    স্পেশাল ব্রাঞ্চ (Special Branch): স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা এসবি হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। এর অবকাঠামো দু'টি স্তরে বিভক্ত। একটি হচ্ছে সিটি-এসবি অন্যটি হচ্ছে ডিস্ট্রিক্ট-এসবি। সিটি-এসবি'র প্রধান ফোকাস হচ্ছে , প্রাপ্ত ইনফরমেশনের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রতিটি জেলারও বিশেষায়িত এই ইউনিট রয়েছে যা ডিস্ট্রিক্ট-এসবি নামে পরিচিত। এছাড়াও স্পেশাল ব্রাঞ্চ পলিটিক্যাল ইন্টেলিজেন্স, মিডিয়া এনালাইসিস, ভিভিআইপি প্রটেকশন, এয়ারপোর্ট, স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরে সুরক্ষা প্রদাণ করে। এর সকল সদস্য বাংলাদেশ পুলিশ থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত। এই শাখার প্রধানের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (Addi IGP) পদমর্যাদা রয়েছে এবং তিনি সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন করেন। এটি বাংলাদেশের একমাত্র গোয়েন্দা সংস্থা যা সমস্ত পরিকল্পনা, পরিচালনা ও কৌশলগত স্তরে কাজ করে। সংগঠনটির দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরেও কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে।

    ডিবি (Detective Branch): ডিবি পুলিশ হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম গোয়েন্দা সংস্থা। এটি মূলত দেশের অভ্যন্তরে কাজ করে। দেশের ৬৪ টি জেলায় এর শাখা রয়েছে। ডিবি পুলিশে সরাসরি কোন নিয়োগ পদ্ধতি নেই। পুলিশ থেকে যাচাই বাছাইয়ের পরই ডিবি পুলিশে নিয়োগ করা হয়। বিভিন্ন হাই প্রোফাইল কেইস, গুম, খুন, মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ।

    পুলিশ অফিসার হওয়ার যোগ্যতা

    আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কি

    আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত একটি দল। বর্তমানে মোট ২০ টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের। নদীপথ বা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলসহ সব জায়গাতেই পুলিশের এই ব্যাটালিয়নগুলো কাজ করছে। বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যাটালিয়নের দুটি ব্যাটেলিয়ন রয়েছে। ২০১০ সালের জুন থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্ব নেবার পর থেকে সেখানকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং যাত্রী হয়রানি রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখেছে। ২১ জুন ২০১১ সালে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন প্রথম নারী ইউনিট চালু করে। ১ জুলাই ২০১৬ সালে গুলশানে জঙ্গি আক্রমণের পর বাংলাদেশের শহর এলাকায় কমান্ডো ইউনিট গঠন করার জন্য সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা গার্ড সেন্টারে প্রশিক্ষণ নেন দলটির কর্মকর্তারা।

    আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এর কাজ

    ১ অক্টোবর ১৯৭৯ সালের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই ব্যাটালিয়নকে যেসব দায়িত্ব দেয়া হয়েছে:

    ক্রমিক দায়িত্ব
    অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা।
    বেআইনি অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক প্রভৃতি উদ্ধার।
    সশস্ত্র অপরাধী চক্র গ্রেফতার।
    আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য ইউনিটকে সহায়তা প্রদান।
    বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোন কাজ।

    পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

    পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী
    ১। আবেদনকারীর কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট থাকতে হবে।
    ২। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা হিসেবে পাসপোর্টে উল্লিখিত স্থায়ী কিংবা জরুরী ঠিকানার যে কোন একটি ব্যবহার করতে হবে এবং আবেদনকারীকে অবশ্যই ঐ ঠিকানার বাসিন্দা হতে হবে।
    ৩। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এম আর পি) এর ক্ষেত্রে যদি পাসপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ না থাকে তবে ঠিকানার প্রমাণ স্বরূপ জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র/স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সনদপত্রের ফটোকপি ১ম শ্রেণীর সরকারী গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করে দাখিল করতে হবে ।
    ৪। বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী কোন ব্যক্তির পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য তিনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন কর্তৃক পাসপোর্টের তথ্য পাতার সত্যায়িত কপি তার পক্ষে করা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
    ৫। বিদেশগামী কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক এবং বাংলাদেশে বসবাস করে স্বদেশে/বিদেশে প্রত্যাবর্তনকারী বিদেশী নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়।
    ৬। বিদেশগামী কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক যারা বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন দেশ থেকে পাসপোর্ট ইস্যু/ রি-ইস্যু করিয়েছেন তাদেরকে বাংলাদেশে আসার পর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে চাইলে সর্বশেষ এরাইভেল (Arrival) সিল সম্বলিত পৃষ্ঠাটির স্ক্যান কপি আবেদনের সাথে আপলোড করতে হবে।
    ৭। প্রবাসী আবেদনকারীগণ যার মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করতে চান তার নাম এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর উল্লেখ করে তাকে সত্যায়ন পূর্বক একটি অনুমতি পত্র (Authorization Letter) আবেদনের সাথে আপলোড করতে হবে। স্থানীয় আবেদনকারীর ক্ষেত্রেও সনদ গ্রহণের সময় সংগ্রহকারীকে অনুরূপ অনুমতি পত্রসহ প্রেরণ করতে হবে।
    ৮। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চাকুরী কিংবা অন্য কোন কাজে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হলে আপনি যে জেলার বাসিন্দা উক্ত জেলা ডিএসবি অফিস অথবা আপনার ঠিকানা যদি মেট্রোপলিটন এলাকায় হয় তাহলে উক্ত মেট্রোপলিটন এলাকার সিটি এসবি অফিসে যোগাযোগ করুন।

    পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের বৈধতা কতদিন ?

    একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জারি হওয়ার তারিখ থেকে শুধুমাত্র ছয় মাসের জন্য বৈধ - যদি না অন্যথায় নির্ধারিত হয়। অতএব, আপনি যখন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাবেন তখন এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে আপনার কাছে পুরানো ডকুমেন্টেশন না থাকে।

    ইন্টারপোল কি

    কল্পনা করুন আপনি অন্য কোন  দেশের একজনের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শিকার হলেন, তিনি পালিয়ে গেলেন । পুলিশ উক্ত  ব্যক্তিকে কিভাবে ধরবে?  আজকের অপরাধ ক্রমবর্ধমানভাবে  আন্তর্জাতিক। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে একটি বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন সংস্থার  মধ্যে সমন্বয় রয়েছে। তা না হলে আল কায়েদা, জে এম বি  বা আইএস এর মত সংগঠনের বিরুদ্দে লড়াই করা একক কোন দেশ বা সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয়।
    ইন্টারপোল বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (International Criminal Police Organization – INTERPOL) এটি জাতিসংঘ-এর পর দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা।  প্রধান কাজ আন্তর্জাতিক পুলিশকে সহায়তা করা। এটি ১৯২৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ কমিশন নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৪৬ সালে বর্তমানের নামে পরিবর্তিত হয়। এটা পুলিশ এবং বেসামরিক উভয় দ্বারা স্টাফ হয়। 
    যেহেতু INTERPOL একটি বিশ্বব্যাপী সংস্থা, এটি সহযোগিতার জন্য এই প্ল্যাটফর্ম প্রদান করতে পারে; তারা  পুলিশকে তাদের প্রতিপক্ষের সাথে সরাসরি কাজ করতে সক্ষম করে , এমনকি কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এমন দেশের মধ্যেও। যেমন, যুক্তরাজ্য এমন একটি দেশ যেটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোলের মর্যাদাকে স্বীকৃতি দেয় না কিন্তু সহযোগিতা করে।

    ইন্টারপোলের বর্তমান সদস্য ১৯৪টি দেশ এবং এই সদস্যরাই বাৎসরিক চাদার মাধ্যমে ৫৯ মিলিয়ন ডলারের বাৎসরিক খরচ নির্বাহ করে।   প্রধান দপ্তর লিয়োঁ, ফ্রান্স-এ, সিঙ্গাপুরে উদ্ভাবনী অফিস ।


    ইন্টারপোল কে নিয়ন্ত্রণ করে?

    ফ্রান্সের লিওনে জেনারেল সেক্রেটারিয়েট এবং প্রতিটি ইন্টারপোল সদস্য দেশে অবস্থিত ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (NCBs) দ্বারা প্রতিদিনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সাধারণ সচিবালয় - সাধারণ সম্পাদক দ্বারা পরিচালিত এবং বছরে 365 দিন 24 ঘন্টা কাজ করে।


    বিশ্ব মঞ্চে পুলিশের জন্য একটি কণ্ঠস্বর প্রদান করে। সহযোগিতা এবং  পরিষেবাগুলির  জন্য সর্বোচ্চ স্তরের সরকারগুলির সাথে জড়িত।


    তাদের সমস্ত পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ এবং বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান আইনের সীমার মধ্যে নেওয়া হয়।


    সেজন্য  প্রতিটি দেশে, একটি ইন্টারপোল অফিস আছে যা NCB নামে পরিচিত ,  জাতীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সাধারণত পুলিশিং এর জন্য দায়ী সরকারি মন্ত্রণালয়ে বসে। সমস্ত দেশকে I-24/7 নামক একটি যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সংযুক্ত করে । দেশগুলি একে অপরের সাথে এবং জেনারেল সেক্রেটারিয়েটের সাথে যোগাযোগ করতে এই নিরাপদ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এটি তাদের কেন্দ্রীয় এবং দূরবর্তী অবস্থান থেকে রিয়েল-টাইমে তাদের  ডেটাবেস এবং পরিষেবাগুলি অ্যাক্সেস করার অনুমতি দেয়।





    INTERPOL কর্তৃক তদন্তকৃত অপরাধসমূহ  

     
    ইন্টারপোল আন্তর্জাতিক অপরাধের তিনটি প্রধান ক্ষেত্র: 
    1. সন্ত্রাস, 
    2. সাইবার অপরাধ এবং 
    3. সংগঠিত অপরাধের 

    উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বিশ্বব্যাপী আইন প্রয়োগকারীকে তদন্তমূলক সহায়তা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করে। অন্যান্য ক্ষেত্র সমূহ হল, 

    • দুর্নীতি
    • জাল কারেন্সি এবং ডকুমেন্টস
    • শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ
    • কালচারাল হেরিটেজ ক্রাইম
    • সাইবার ক্রাইম
    • ড্রাগ পাচার
    • পরিবেশগত অপরাধ
    • আর্থিক অপরাধ
    • আগ্নেয়াস্ত্র পাচার
    • মানব পাচার
    • অবৈধ পণ্য
    • মেরিটাইম ক্রাইম
    • সংগঠিত অপরাধ
    • মানব পাচার
    • সন্ত্রাস
    • যানবাহন অপরাধ
    • যুদ্ধ অপরাধ


    বিশ্ব জুড়ে ইন্টার পোল এর এজেন্সি সমূহ
     


    ইন্টার পোলের  রেড নোটিস 


    একটি রেড নোটিশ হল বিশ্বব্যাপী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে প্রত্যর্পণ, আত্মসমর্পণ বা অনুরূপ আইনি পদক্ষেপের অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে এবং সাময়িকভাবে গ্রেপ্তার করার জন্য একটি অনুরোধ। একটি রেড নোটিস একটি আন্তর্জাতিক গ্রেফতারী পরোয়ানা নয়।

    উক্ত  ব্যক্তিদের অনুরোধকারী সদস্য দেশ বা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল দ্বারা চাওয়া হয়। সদস্য দেশগুলি কোনও ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব আইন প্রয়োগ করে।

    বেশিরভাগ রেড নোটিশ শুধুমাত্র আইন প্রয়োগকারীর ব্যবহারের জন্য সীমাবদ্ধ।

    রেড নোটিশের নোটিসগুলো  সংশ্লিষ্ট সদস্য দেশের অনুরোধে প্রকাশিত হয় এবং যেখানে কোনও ব্যক্তিকে সনাক্ত করার জন্য জনসাধারণের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে বা যদি ব্যক্তি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। বর্তমান  সার্কুলেশনে মোট পাবলিক রেড নোটিশের সংখ্যা: 7101 জন, তার মধ্যে   বাংলাদেশি অপরাধী Bangladesh ৬২ জন   অপরাধীর জন্য লিংকটি দেখা যেতে পারে ।



    আমি কি ইন্টারপোলে যোগ দিতে পারি ?


    ইন্টারপোল সরাসরি এজেন্ট নিয়োগ করে না। বিভিন্ন সদস্য দেশ তাদের দেশের প্রধান অপরাধ তদন্তকারী সংস্থা থেকে এজেন্টদের সংস্থায় নিয়োগ করে। আপনাকে অবশ্যই একটি সদস্য দেশের একটি সংস্থার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনার বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে এবং ইন্টারপোল সদস্য দেশের অন্তর্গত হতে হবে ।


    ইন্টারপোল কি কোথাও গ্রেপ্তার করতে পারে?

    উত্তর হল, "না।" ইন্টারপোল কোথাও গ্রেপ্তার করে না। ইন্টারপোলের নিজস্ব কোনো কর্মকর্তা নেই যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতো কাজ করে।


    পুলিশকে সম্মান জানানো আমাদের কর্তব্য। 


    স্বাস্থ্যের কথা/ বাংলাভাষায় অনলাইন স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন
    সূত্র, উইকিপিডিয়া, পুলিশ বিভাগ

    মন্তব্যসমূহ