পুলিশ
চিত্র, বিপদের বন্ধু
একটি রাষ্ট্রের বেসামরিক বাহিনী, অপরাধ প্রতিরোধ ও সনাক্তকরণ এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়ী। পুলিশ সাধারণত জনসাধারণের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, আইন প্রয়োগ করা এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং তদন্তের জন্য দায়ী। এই ফাংশনগুলি পুলিশিং নামে পরিচিত। যেমন "কেউ খুন হলে পুলিশকে জানাতে হবে"।
স্থানীয় পুলিশের প্রধান কাজ কি কি?
বাংলাদেশ পুলিশের সংগঠন গুলো কি
বাংলাদেশ পুলিশ সংগঠন। বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান হলেন মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি)। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ সংগঠন বিভিন্ন ইউনিট বা ভাগে বিভক্ত।
ইউনিটসমূহ:
বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণত কি কাজ করে
বাংলাদেশ পুলিশ বাংলাদেশের একমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা যার সদস্য ২,১২,৭২৪ । সংস্থাটি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান অধিকর্তাকে বলা হয় মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি)। বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণত যে কাজগুলো করে থাকে তা হল:
পুলিশের সিআইডি, পিবিআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং ডিবি-এর কাজের মধ্যে পার্থক্য কী?
সিআইডি হলো পুলিশের সবচেয়ে পুরনো এবং প্রধান তদন্তকারী শাখা। সবচেয়ে কঠিন এবং স্পর্শকাতর কেসগুলো সিআইডি তদন্ত করে, যেমন দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাক। সাইবার ক্রাইম এবং ফরেনসিকও সিআইডির এখতিয়ারে পড়ে।
পিবিআই এর কাজও সিআইডির মতোই, তবে এর আকৃতি ও ব্যাপ্তি আরো বড়। পিবিআই প্রথম দিকে কোল্ড কেস, অর্থাৎ পুরনো অমিমাংসিত রহস্যজনক কেসের তদন্ত করলেও, এখন নতুন কেসেরও তদন্ত করে। সিআইডির সাথে এর প্রধান পার্থক্য হলো এটি জেলা পর্যায়ে উপস্থিত, সিআইডির মত হেডকোয়ার্টার কেন্দ্রিক নয়।
বর্তমানে সিআইডি অনেকটাই টেকনিক্যাল তদন্ত করে, অপরদিকে পিবিআই ট্র্যাডিশনাল হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন করে থাকে।
ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের কাজও তদন্ত করা, মূলত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান এবং টেররিজম জাতীয় অপরাধ ডিল করে। সকল জেলা পুলিশের আলাদা ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ থাকে, মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি বিভাগে আলাদা ডিবি ইউনিট থাকে। গোয়েন্দা পুলিশ বলতে মূলত এই ডিবিকেই বোঝায়।
এই তিনটির সাথে স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা এসবির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এটি তদন্তকারী সংস্থা বা ইউনিট নয়, এটি একটি গোয়েন্দা সংস্থা, অর্থাৎ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। বাংলায় সবগুলোই গোয়েন্দা বিভাগ হলেও, ইন্টেলিজেন্স আর ইনভেস্টিগেশন দুটো একেবারেই ভিন্ন কাজ। এসবির কাজ দেশের জাতীয় নিরাপত্তার অভ্যন্তরীণ দিক নিয়ে। দেশের ভিতর সক্রিয় বিদেশি ইন্টেলিজেন্স অফিসারদের শনাক্ত করা, গতিবিধির নজর রাখা এবং তাদের স্পাইদের শনাক্ত, দমন এবং পাল্টা ব্যবহার করা — এগুলোকে বলা হয় কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স। এর জন্য সব বিদেশি সংস্থা, এনজিও এবং কুটনীতিকদের উপর তারা নজর রাখে। এছাড়াও যেকোনো গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগের তদন্ত করাও এসবির দায়িত্ব। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স, ভিআইপি সিকিউরিটি, পলিটিকাল ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদিও এসবির দায়িত্ব। জেলা এবং শহর সব পর্যায়েই এসবির কার্যক্রম রয়েছে।
সিআইডি (Criminal Investigation Department): সিআইডি বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ এর একটি বিশেষায়িত শাখা। এই শাখাটি জরুরী অপরাধসমূহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেটার ভিত্তিতে তদন্ত করে। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসের অর্থায়ণ, অর্থ পাচার, সাইবার ক্রাইম এবং সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বদা সচেষ্ট থাকে বাংলাদেশ সিআইডি। বড় অপরাধসমূহের সুরাহা করতে দেরী হলে সিআইডি সঠিক তদন্ত করে কম সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বদ্ধপরিকর। এছাড়াও সিআইডি, বাংলাদেশ পুলিশকে প্রয়োজনে ফরেন্সিক সাপোর্টও প্রদান করে থাকে।
পিবিআই (Police Bureau of Investigation): বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা হচ্ছে 'পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন। এই সংগঠনটির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর মতো একটি সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। পিবিআই এমন সব জটিল মামলাসমূহের তদন্ত করে যার স্পস্ট ধারণা বা উদ্দেশ্যগুলির অভাব রয়েছে। নেভাল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের নিজস্ব গোয়েন্দা শাখা আছে যেগুলো পানিপথের নিরাপত্তা, ট্যুরিস্ট স্পট এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনের নিরাপত্তা প্রদান করে।
স্পেশাল ব্রাঞ্চ (Special Branch): স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা এসবি হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। এর অবকাঠামো দু'টি স্তরে বিভক্ত। একটি হচ্ছে সিটি-এসবি অন্যটি হচ্ছে ডিস্ট্রিক্ট-এসবি। সিটি-এসবি'র প্রধান ফোকাস হচ্ছে , প্রাপ্ত ইনফরমেশনের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রতিটি জেলারও বিশেষায়িত এই ইউনিট রয়েছে যা ডিস্ট্রিক্ট-এসবি নামে পরিচিত। এছাড়াও স্পেশাল ব্রাঞ্চ পলিটিক্যাল ইন্টেলিজেন্স, মিডিয়া এনালাইসিস, ভিভিআইপি প্রটেকশন, এয়ারপোর্ট, স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরে সুরক্ষা প্রদাণ করে। এর সকল সদস্য বাংলাদেশ পুলিশ থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত। এই শাখার প্রধানের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (Addi IGP) পদমর্যাদা রয়েছে এবং তিনি সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন করেন। এটি বাংলাদেশের একমাত্র গোয়েন্দা সংস্থা যা সমস্ত পরিকল্পনা, পরিচালনা ও কৌশলগত স্তরে কাজ করে। সংগঠনটির দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরেও কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে।
ডিবি (Detective Branch): ডিবি পুলিশ হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম গোয়েন্দা সংস্থা। এটি মূলত দেশের অভ্যন্তরে কাজ করে। দেশের ৬৪ টি জেলায় এর শাখা রয়েছে। ডিবি পুলিশে সরাসরি কোন নিয়োগ পদ্ধতি নেই। পুলিশ থেকে যাচাই বাছাইয়ের পরই ডিবি পুলিশে নিয়োগ করা হয়। বিভিন্ন হাই প্রোফাইল কেইস, গুম, খুন, মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ।
পুলিশ অফিসার হওয়ার যোগ্যতা
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কি
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত একটি দল। বর্তমানে মোট ২০ টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের। নদীপথ বা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলসহ সব জায়গাতেই পুলিশের এই ব্যাটালিয়নগুলো কাজ করছে। বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যাটালিয়নের দুটি ব্যাটেলিয়ন রয়েছে। ২০১০ সালের জুন থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্ব নেবার পর থেকে সেখানকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং যাত্রী হয়রানি রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখেছে। ২১ জুন ২০১১ সালে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন প্রথম নারী ইউনিট চালু করে। ১ জুলাই ২০১৬ সালে গুলশানে জঙ্গি আক্রমণের পর বাংলাদেশের শহর এলাকায় কমান্ডো ইউনিট গঠন করার জন্য সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা গার্ড সেন্টারে প্রশিক্ষণ নেন দলটির কর্মকর্তারা।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এর কাজ
১ অক্টোবর ১৯৭৯ সালের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই ব্যাটালিয়নকে যেসব দায়িত্ব দেয়া হয়েছে:
ক্রমিক | দায়িত্ব |
---|---|
ক | অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা। |
খ | বেআইনি অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক প্রভৃতি উদ্ধার। |
গ | সশস্ত্র অপরাধী চক্র গ্রেফতার। |
ঘ | আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য ইউনিটকে সহায়তা প্রদান। |
ঙ | বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোন কাজ। |
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
১। আবেদনকারীর কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট থাকতে হবে।
২। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা হিসেবে পাসপোর্টে উল্লিখিত স্থায়ী কিংবা জরুরী ঠিকানার যে কোন একটি ব্যবহার করতে হবে এবং আবেদনকারীকে অবশ্যই ঐ ঠিকানার বাসিন্দা হতে হবে।
৩। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এম আর পি) এর ক্ষেত্রে যদি পাসপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ না থাকে তবে ঠিকানার প্রমাণ স্বরূপ জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র/স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সনদপত্রের ফটোকপি ১ম শ্রেণীর সরকারী গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করে দাখিল করতে হবে ।
৪। বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী কোন ব্যক্তির পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য তিনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন কর্তৃক পাসপোর্টের তথ্য পাতার সত্যায়িত কপি তার পক্ষে করা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
৫। বিদেশগামী কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক এবং বাংলাদেশে বসবাস করে স্বদেশে/বিদেশে প্রত্যাবর্তনকারী বিদেশী নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়।
৬। বিদেশগামী কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক যারা বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন দেশ থেকে পাসপোর্ট ইস্যু/ রি-ইস্যু করিয়েছেন তাদেরকে বাংলাদেশে আসার পর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে চাইলে সর্বশেষ এরাইভেল (Arrival) সিল সম্বলিত পৃষ্ঠাটির স্ক্যান কপি আবেদনের সাথে আপলোড করতে হবে।
৭। প্রবাসী আবেদনকারীগণ যার মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করতে চান তার নাম এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর উল্লেখ করে তাকে সত্যায়ন পূর্বক একটি অনুমতি পত্র (Authorization Letter) আবেদনের সাথে আপলোড করতে হবে। স্থানীয় আবেদনকারীর ক্ষেত্রেও সনদ গ্রহণের সময় সংগ্রহকারীকে অনুরূপ অনুমতি পত্রসহ প্রেরণ করতে হবে।
৮। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চাকুরী কিংবা অন্য কোন কাজে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হলে আপনি যে জেলার বাসিন্দা উক্ত জেলা ডিএসবি অফিস অথবা আপনার ঠিকানা যদি মেট্রোপলিটন এলাকায় হয় তাহলে উক্ত মেট্রোপলিটন এলাকার সিটি এসবি অফিসে যোগাযোগ করুন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের বৈধতা কতদিন ?
ইন্টারপোল কি
ইন্টারপোল কে নিয়ন্ত্রণ করে?
INTERPOL কর্তৃক তদন্তকৃত অপরাধসমূহ
- সন্ত্রাস,
- সাইবার অপরাধ এবং
- সংগঠিত অপরাধের
- দুর্নীতি
- জাল কারেন্সি এবং ডকুমেন্টস
- শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ
- কালচারাল হেরিটেজ ক্রাইম
- সাইবার ক্রাইম
- ড্রাগ পাচার
- পরিবেশগত অপরাধ
- আর্থিক অপরাধ
- আগ্নেয়াস্ত্র পাচার
- মানব পাচার
- অবৈধ পণ্য
- মেরিটাইম ক্রাইম
- সংগঠিত অপরাধ
- মানব পাচার
- সন্ত্রাস
- যানবাহন অপরাধ
- যুদ্ধ অপরাধ
বিশ্ব জুড়ে ইন্টার পোল এর এজেন্সি সমূহ |
মন্তব্যসমূহ