কিভাবে ঔষধের লেবেল পড়তে হয়

কিভাবে ঔষধের লেবেল পড়তে হয়

ঔষধের লেবেল

ওষুধের লেবেলে কী আছে?


প্রতিটি ডোজ ইউনিটের পরিমাণ সহ পণ্যটির সক্রিয় উপাদান। পণ্যের উদ্দেশ্য। পণ্যের জন্য ব্যবহার (ইঙ্গিত)। নির্দিষ্ট সতর্কতা, কোন পরিস্থিতিতে কখন পণ্যটি ব্যবহার করা উচিত নয় এবং কখন ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের সাথে পরামর্শ করা উপযুক্ত তা সহ।

ওষুধের লেবেলিংকে প্রেসক্রিপশন লেবেলিং হিসাবেও উল্লেখ করা হয়, এটি কোনও ওষুধ বা তার কোনও পাত্রে বা এই জাতীয় ওষুধের সাথে লিখিত, মুদ্রিত বা গ্রাফিক বিষয়। ওষুধের লেবেলগুলি ওষুধের বিষয়বস্তু সনাক্ত করতে এবং প্রশাসন, সঞ্চয় ও নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশাবলী বা সতর্কতাগুলিকে ঘোষণা করার চেষ্টা করে।
এটি প্রতিটি ডোজ ইউনিটের পরিমাণ সহ পণ্যটির সক্রিয় উপাদান। পণ্যের উদ্দেশ্য। পণ্যের জন্য ব্যবহার (ইঙ্গিত)। কোন পরিস্থিতিতে কখন পণ্যটি ব্যবহার করা উচিত নয় এবং কখন ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের সাথে পরামর্শ করা উপযুক্ত তা সহ নির্দিষ্ট সতর্কতা।

আপনি কী ঔষধের লেবেল পড়ে ঔষধ খেয়েছেন কখনো?

কত শতাংশ মানুষ ওষুধ খাচ্ছেন? সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের ৬৬ শতাংশ - প্রেসক্রিপশন ওষুধ ব্যবহার করে। ব্যবহার বিশেষত বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার জন্য বেশী। প্রেসক্রিপশনের ওষুধগুলি ব্যয়বহুল।

সম্ভবত না, কারণ আমরা এই সহজ জিনিষটি অনেকেই উপেক্ষা করি। কী আছে এতে? চলুন জেনে নেয়া যাক।
ড্রাগ বা ঔষধের যে সকল তথ্য আমাদের জানা উচিতঃ


কখন লেবেল অন্তত তিনবার পড়া উচিত ? ওষুধের লেবেলটি অবশ্যই নাম, ডোজ এবং রুটের জন্য পরীক্ষা করতে হবে এবং তিনটি ভিন্ন সময়ে MAR এর সাথে তুলনা করতে হবে:
  • যখন ওষুধ ড্রয়ার থেকে বের করা হয়।
  • যখন ওষুধ ঢেলে দেওয়া হচ্ছে।
  • যখন ওষুধটি দূরে রাখা হয়/বা বিছানার পাশে।

  • ১, ফার্মেসিতে যে ওষুধটি কিনছেন তার প্যাকেটের সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে।  ওভার-দ্য-কাউন্টার  /OTC  (প্রেসক্রিপশন ব্যতিত বিক্রয় যোগ্য) ড্রাগগুলোর ফ্যাক্টস প্যানেল জানা কঠিন কিছু নয়। এটি কীভাবে নিতে হবে, এতে কী রয়েছে এবং এটি রুগীকে কেমন অনুভব করাতে পারে তা জানতে দেয়। 

    কিন্তু যেভাবে তথ্যগুলো লেখা হয় তা বোঝা কঠিন করে তুলতে পারে।  ওষুধের লেবেলগুলি কীভাবে বোঝা যায় তা এখানে সহজভাবে রয়েছে যাতে কেউ সাধারণ, সম্ভবত বিপজ্জনক ভুলগুলি এড়াতে পারেন৷


    চিকিৎসক কর্তৃক স্থানীয় ফার্মেসীতে পাঠানো লেবেল

    ২, ঔষধের সক্রিয় উপাদান এবং উদ্দেশ্যঃ

     ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধের লেবেলের শীর্ষে এই তথ্যটি খুঁজুন।  এটি ওষুধের উপাদান যা একটি উপসর্গের চিকিৎসা করে, সেই সাথে ওষুধের ধরন যেমন "অ্যান্টিহিস্টামিন" বা "ব্যথা উপশমকারী" ঔষধ কিনা  বলে মেয় । 
    এটি  প্রতিটি ডোজে কতটা ওষুধ রয়েছে তাও বলে।  কেউ একই উপাদান সহ অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করছেন না তা নিশ্চিত করতে এবং পণ্যটি তাঁর জন্য কী করবে তা বোঝার জন্য এটি পরীক্ষা করুন।


    ড্রাগ তথ্য মানে কি? প্রতিটি ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ঔষধ আপনি দোকান থেকে কিনতে পারেন একটি 'ড্রাগ ফ্যাক্টস' লেবেল অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক। এই লেবেলে ওষুধটি কী করে এবং কীভাবে এটি নিরাপদে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে তথ্য রয়েছে৷
    ড্রাগ ফ্যাক্ট্স

    ঔষধের প্যাকেটে সংরক্ষিত লেবেল

    ৩,ঔষধের ব্যবহারসমূহঃ

    এই বিভাগটি  উপসর্গ বা রোগের একটি বিবরণ দেয় যা ওষুধটি চিকিত্সা করতে পারে।  উদাহরণস্বরূপ, একটি ব্যথা-নিবারক লেবেল বলতে পারে যে এটি দাঁতের ব্যথা, মাথাব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং মাসিকের ক্র্যাম্পগুলিকে সহজ করে।  আপনি যখন একটি নতুন ওষুধ কিনবেন তখন সর্বদা এই অংশটি পরীক্ষা করে দেখুন যে এটি আপনার যা করতে হবে তা করবে।

    ৪, ঔষধের  সতর্কবাণীঃ

    এটি ড্রাগ লেবেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলির মধ্যে একটি এবং এটি সাধারণত সবচেয়ে বড়।  এটি  ওষুধ সম্পর্কে নিরাপত্তা বিশদ ভাবে দেয়।   এখানে চারটি জিনিস পাবেন:
    -কার ওষুধ সেবন করা উচিত নয়,
    -কখন  এটি ব্যবহার বন্ধ করা উচিত,
    -কখন  ডাক্তারকে কল করবেন এবং
    -কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।

    এটি কিছু স্বাস্থ্য শর্ত বা অন্যান্য ওষুধের সাথে গ্রহণ করা নিরাপদ নয় কিনা তা পরীক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।

    ৫, ঔষধের মাত্রা /সময় নির্দেশঃ

    এই অংশটি সাবধানে পরীক্ষা করুন। এটি বলে যে কতটা ওষুধ খেতে হবে এবং কত ঘন ঘন সেবন করতে হবে, একে ডোজ বলে।

    উদাহরণস্বরূপ, এটি প্রতি ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর পর দুটি ট্যাবলেট নিতে বলতে পারে।   ডাক্তারের সাথে কথা না বলে লেবেলের চেয়ে বেশি গ্রহণ করবেন না।  নির্দেশাবলী বয়স অনুসারে গোষ্ঠীবদ্ধ করা হয়েছে, তাই  জানেন যে আপনি বা আপনার সন্তান কতটা ব্যবহার করতে পারেন।   ১ দিনের মধ্যে সর্বাধিক কত পরিমাণ ঔষধ গ্রহণ করবেন সে সম্পর্কেও বিশদ বিবরণ পাবেন।

    ৬, ঔষধের অন্যান্য তথ্যঃ

    তাপ এবং আর্দ্রতা কখনও কখনও ওষুধের ক্ষতি করতে পারে, তাই আবহাওয়া উষ্ণ হলে সেগুলিকে রুমে বা গাড়িতে রাখা ভাল ধারণা না। লেবেলের এই অংশটি পণ্য সংরক্ষণের জন্য সঠিক তাপমাত্রার পরিসীমা বলবে।  এটি  মনে করিয়ে দেয় যে  এটি ব্যবহার করার আগে প্যাকেজের নিরাপত্তা সীলটি ভাঙা হয়নি তা নিশ্চিত করুন, যা টেম্পারিংয়ের লক্ষণ হতে পারে।

    ৭,ঔষুধের নিষ্ক্রিয় উপাদান গুলোঃ

    এগুলি একটি ওষুধের উপাদান যা সরাসরি  উপসর্গগুলিকে চিকিত্সা করে না।  এগুলি প্রিজারভেটিভ, রং বা স্বাদ হতে পারে।  আপনার বা আপনার সন্তানের খাবার বা রঞ্জক অ্যালার্জি আছে কিনা সর্বদা এই বিভাগটি পরীক্ষা করুন।  মনে রাখবেন যে একই ধরণের ওষুধের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন নিষ্ক্রিয় উপাদান থাকতে পারে।

    ঔষধের নামকরণের জন্য প্রতিটি কোম্পানির নিজস্ব 'নামকরণ ' টিম থাকে। আমাদের দেশের কোম্পানিগুলোর ও আছে, তা সত্ত্বেও তারা বেশিরভাগ ঔষধের বিদেশী নাম নকল করে।

    কেন করে সেটা পরে বলছি।

    ঔষধ লেবেলিং এর মূলনীতি :

    ঔষধের বোতল সেটা পিল বা বড়ির জন্য, সিরাপ বা সাসপেন্সন বা পাউডার ঔষধের জন্য ব্যবহৃত হয়।

    কীভাবে একটি বোতলের নামকরণ হয় সেটা জানতে হলে 'ড্রাগ ফ্যাক্টস' জানতে হবে। সেটা যেসকল বিষয়ের উপর নির্ভর করে তা উপরে উল্লেখ সত্ত্বেও করলাম।

    1. সক্রিয় উপাদান - এই বিভাগটি ওষুধের সেই অংশ যা কাজ করে।
    2. উদ্দেশ্য - এই বিভাগটি সক্রিয় উপাদান বিভাগের পাশে বা নিচে পাওয়া যায়। যে উদ্দেশ্যে ঔষধ টি ব্যবহৃত হয়।
    3. ব্যবহার,
    4. সতর্কতা,
    5. নির্দেশাবলী
    6.  অন্যান্য তথ্য
    7.  নিষ্ক্রিয় উপাদান

    ধরুন, নাপা নামে জ্বরের যে ঔষুধ টি বাজারে পাওয়া যায়, সেটির সক্রিয় উপাদান এসিটামিনোফান। নাপা নাম রাখার কারন সম্ভবত ' রাশিয়ার এই ঔষধটি নাপা নামে ইউরোপে বিখ্যাত।

    আমাদের দেশের অধিকাংশ ঔষধের নাম অন্যদেশের থেকে নকল। যদিও উক্ত কোম্পানির প্রতিনিধি বলে থাকেন, 'নান পাইরেটিক ' এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো নাপা ।

    'লসেক' নামের ওমেপ্রাজোল ইউরোপ, আমেরিকা, ভারতে পাওয়া যায় , সেটার নাম বদলিয়ে লসেকটিল নামে বাংলাদেশে বেশ চলছে ।

    একটি এন্টিবায়োটিকের নাম, furocef যার জেনেরিক নাম cefuroxim। এক্ষেত্রে নামের ব্যাখ্যা হলো, furious for germ, safe for humen থেকে furecef এর উদ্ভব।

    তেমনিভাবে, cef3 এন্টিবায়োটিক যা 3rd generation cephalosporin এই জেনেরিক নামের থেকে উদ্ভুত।


    সূত্রঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা


    মন্তব্যসমূহ