শুধু নেট দুনিয়া কেন আতিথেয়তা থেকে শুরু করে, স্ট্রিট ফুড, মেলোডি গান, ধ্রুপদী নৃত্য, সিরিয়াল নির্মাণ সহ অনেক কিছুতেই ভারতীয়রা বিশ্বসেরা। ক্রিকেট খেলিয়ে সবদেশে ফ্রান্চাইজি লীগ হয়। কিন্তু আইপিএল নিয়ে নেট দুনিয়ায় মাতামাতি সুনামীসম। ইংলিশ প্রিমিয়ারলীগ কে স্পনসর বাণিজ্যে দ্বিতীয়স্থানে নামিয়ে দিয়েছে ভারত। এগুলো অকল্পনীয়। ভারতের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি প্রায়। ইংরেজি (ইন্টারনেটের প্রধান ভাষা) ভারতের একটি অন্যতম ভাষা। ভারতীয়রা অফিসিয়াল এবং পেশাদার কাজের জন্য, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে, জ্ঞান অর্জনের জন্য ব্যাপকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। প্রত্যেকে ভাষা অনুযায়ী তাদের পছন্দনীয় সাইট বেছে নেয়। এটি প্রযুক্তির প্রতি ভারতীয় সমাজের আপগ্রেডেশন বোঝায়। সে দেশের গড় মাসিক মোবাইল ডেটা ব্যবহার প্রতি ব্যবহারকারী ১১ গিগাবাইট (GB) যা বিশ্বের সর্বোচ্চ মাথাপিছু ডেটা খরচ, (নকিয়ার গবেষণা অনুসারে)। নোকিয়া রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতে মোবাইল ডেটার দাম বিশ্বের সর্বনিম্ন, প্রতি GB প্রতি ১০ ইউএস সেন্ট। ভারতীয় ইউনিকর্ন, যেমন রাইড অ্যাপ ওলা, এডুকেশন অ্যাপ বাইজু, বেদান্ত, unacademy, টপার, সার্চ ইঞ্জিন বাইডু, অনলাইন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পলিসি বাজার এবং সফটওয়্যার-এ-সার্ভিস (সাস) কোম্পানি এখন বিশ্ব সেরা। ভারতে ইন্টারনেট ১৯৮৬ সালে শুরু হয়েছিল এবং শুধুমাত্র শিক্ষাগত এবং গবেষণা সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত ছিল। ১৯৯৫ সালে ইন্টারনেটে সাধারণ জনগণের অ্যাক্সেস শুরু হয়েছিল৷ আমেরিকান বহুজাতিক ডিজিটাল যোগাযোগ প্রযুক্তি সংস্থা সিসকো অনুমান করেছে যে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতে ৯০ কোটির ও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকবে৷ এই অধমের স্বাস্থ্যের কথা নামক একটি সামান্য বাংলাব্লগেও ভারতীয় বাংগালীরা পদধূলি দেন, তৃতীয় সর্বোচ্চ ভিউয়ার হিসেবে। ভারতের জনসংখ্যা ২ কোটি করে বাড়ছে প্রতি বছর। এদের ২০ % ও যদি ছড়া শুনতে ইউটিউব আসে সেটা সামাজিক মাধ্যমের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ঘটাবে। ভারতীয়দের একটি একটি বড় অংশ বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে, বলা যায় বিশ্বের এক চতুর্থঙ্গশ জনগণ ভারতীয়। পার্শ্ববর্তী দেশের একজন বাসিন্দা হিসাবে, আপনি কি কখনও ভাবছেন যে ভারতীয়রা ইন্টারনেটে কী করতে পছন্দ করে? আপনি ইতিমধ্যে কয়েকটি অনুমান করে থাকতে পারেন তাদের মধ্যে কতগুলি সঠিক তা একবার দেখে নেওয়া যাক। কোৱা ও টুইটারে কয়েক কোটি ভারতীয় পাকিস্তানীদের মুন্ডুপাত করছে,, যদিও বেশিরভাগ পাকিস্তানিরা ইংরেজি জানেনা বলে খুব কম জবাব দিতে পারছে। বলাই বাহুল্য, এটি শুধু ভারতের জন্য নয়, বাকি বিশ্বের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র। অনলাইন কেনাকাটার প্রবণতা ইতিমধ্যে গত এক দশক ধরে মগডালে আরোহণ করছে। কিন্তু বিশ্ব কোভিডের মুখোমুখি হওয়ার সাথে সাথে এর সংখ্যা কয়েক ডাল লাফিয়ে উঠল! আপনি লক্ষ্য করতে পারেন যে যে ক্ষেত্রগুলিতে সবচেয়ে বেশি যানজট দেখা যায় তা হল পোশাক এবং ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স, আসবাবপত্র, মুদি, গৃহস্থালীর পণ্য, ওষুধ এবং খাবার৷ বিশেষজ্ঞরা জানেন যে প্রাথমিক কেনাকাটার পরে কেনাকাটা করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের সম্ভাবনা কমপক্ষে ৪ সপ্তাহের জন্য বিরতি দেয় গ্রাহক গণ। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে বারবার কেনাকাটার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলি হল মুদি, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র এবং ওষুধ, অনলাইনে একই ঠিকানা হতে প্রতিদিন অর্ডার হতে দেখা যায় কোন না কোন পণ্য৷ যেটা সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে তা হল খাবার অর্ডার করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকা সত্ত্বেও কিছু কম । Deloitte পরিসংখ্যান দেখায় যে শুধুমাত্র ১% ভোক্তা প্রাথমিক ক্রয়ের ৪ সপ্তাহের মধ্যে খাবারের অর্ডার দেয়। আরেকটি ক্ষেত্র যেখানে ভারতীয়রা বেশি খরচ করে তা হল ইলেকট্রনিক্স। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দা হওয়া সত্ত্বেও ভারতের বাস্তবতা ভিন্ন। ভারতীয়রা বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কে খুব আশাবাদী। তারা বিশ্বাস করে যে সকলের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করবে। এবং এটি অবশ্যই তাদের ক্রয়ের ধরণকে প্রভাবিত করেছে, তারা কেনাকাটি কমিয়ে দেয়নি। কারও অবাক হওয়ার কিছু নেই, ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটি বিশাল অংশ তাদের সময় অনলাইনে গেমিংয়ে ব্যয় করে। অনলাইন চেস, বিলিয়ার্ড, ৩ পাত্তি, মোবাইল গেমস, পিসি গেমস, ভিআর গেমস, মাল্টিপ্লেয়ার টুর্নামেন্ট বা অন্য কিছু যা আপনি ভাবতে পারেন, ভারতীয়দের সর্বত্র শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। মজার বিষয় হল, অনেক ব্যবহারকারী তাদের অবসর সময় কাটানোর জন্য নিরাপদ iGaming সাইটগুলি খোঁজেন। আপনি যদি আগে থেকেই না জেনে থাকেন, ভারতীয়রা দীর্ঘদিন ধরে বাজি ধরার বড় অনুরাগী। অফশোর অপারেটরদের সাম্প্রতিক আগমনের ফলে অনলাইন ক্যাসিনো শিল্পের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। অনলাইন ক্যাসিনো গেমের পাশাপাশি স্পোর্টস বেটিং সংক্রান্ত সমস্ত সর্বশেষ তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। ১xbat, melbat, এসব বাজির সাইট তো ভারত ছাপিয়ে বাংলাদেশ ছয়লাব করে দিয়েছে। আপনি অবশ্যই ভারতীয় সোপ অপেরা শিল্প সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। প্রকৃতপক্ষে, এটি তার তীব্র উৎপাদন মূল্য এবং দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার জন্য সারা বিশ্বে স্বীকৃত। পর্দায় চিত্রিত নাটকটি হিন্দি বা বাংলা সিরিয়াল প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিবারের জন্য বিনোদনের অন্যতম উত্স। যাইহোক, সাম্প্রতিক সময়ে দৃষ্টান্তটি অনেকটাই বদলেছে। লোকেরা টিভির পরিবর্তে VOD প্ল্যাটফর্ম যেমন Netflix, Amazon Prime, Hulu ইত্যাদিতে বেশি সময় ব্যয় করছে। তরুণদের একটা বড় অংশ আর টিভি দেখে না। কেন? আপনি যা কিছু ভাবতে পারেন তা এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। এই দৃষ্টান্ত পরিবর্তনের ফলে, অনেক বড়-বড় চলচ্চিত্র তারকা এবং টিভি ব্যক্তিত্ব তাদের সিনেমা বা শো চালু করার জন্য VOD প্ল্যাটফর্মের সাথে অংশীদারিত্ব করছে। এই VOD প্ল্যাটফর্মগুলিকে ধন্যবাদ, বড় পর্দায় অনেক দুঃখিত গুণী অভিনেতা অবশেষে তাদের ভূমিকা খুঁজে পেয়েছেন। সুতরাং, ভারতীয়দের সময়ের একটি বড় অংশ কোথায় যায় তা বোধগম্য।ভারতের ইন্টারনেট খরচ
ভারতীয় প্ল্যাটফর্ম সমূহ
২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৭০ কোটি ভারতীয় ব্যবহারকারী রয়েছে যা চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইন্টারনেট বাজার। এর মধ্যে ৪০ কোটি সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় এবং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে হোয়াটস্যাপ এবং ফেইসবুক উভয়ই ভারতকে তাদের বৃহত্তম বাজার হিসাবে গণ্য করে।নেট দুনিয়ায় ভারতীয়দের উপস্থিতি বেশি কেন
কি করছে ভারতীয়রা ইন্টারনেটে
উদ্ভিজ প্রোটিন, আমিষের অন্যতম উৎস
!!!কেনাকাটা
এই পৃথিবীতে, সবাই কেনাকাটা করতে পছন্দ করে, বিশেষ করে মেয়েরা। কেনাকাটা শুধুমাত্র একটি শব্দ বা কিছু একটি পণ্য কেনা নয়, কখনও কখনও এটা কারো আবেগ। ভারতীয় মেয়েরা কিনতে দক্ষ , অনলাইনে, অফলাইনে ও।অনলাইন গেমিং
সিনেমা/টিভি শো
বলিউড সবচেয়ে সুন্দর, বিশুদ্ধ এবং রোমান্টিক উপায়ে প্রেমের সারাংশ নিয়ে আসে যা প্রত্যেকের হৃদয়ে ছাপ ফেলে। মন্দ দিক
মানুষ সাহায্য করতে পারে না এমন জিনিস ছাড়া আপনি যেকোনো কিছু নিয়ে মজা করতে পারেন। মানুষ তাদের (যৌনকর্মী) জাতি বা তাদের লিঙ্গ বা তাদের বয়সকে সাহায্য করতে পারেন না, তাই আপনি পরিবর্তে তাদের ভান বা তাদের অহংকারকে উপহাস করেন। আপনি তাদের ধারণাকে উপহাস করতে পারেন - ধারণার অনুভূতি থাকে না। আপনাদের চোখের ক্ষুধা আছে, আপনি এমন একটি ধারণাকে উপহাস করতে পারেন যা কেউ তাদের আঘাত না করে ধরে রাখে। কারণ আপনি যৌন কাঙাল।
এবার এর মন্দ দিক নিয়ে বলি। তাদের সস্তা ইন্টারনেট আছে, তারা অনেক সময় নষ্ট করতে ভালোবাসে, ফেসবুক টুইটারে দেখুন সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করছে তারা। অল্পতেই অনেকে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে। তবে এর বেশীরভাগ নৃত্য ও সংগীত নিয়ে। তাই ভারত এখনো উন্নয়নশীল দেশ ।
এই বিপুল সময় নেট দুনিয়ায় উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার করা গেলে এশিয়ার জার্মানি হত ভারত। কিন্তু জোমাটোর ফুড ডেলিভারিম্যান কোন ধর্মের মানুষ কিংবা ধাবাবাবার ভিডিও দেখে সময় ব্যয় করা তারুণ্যর অপচয়।
" মানিকে মাগে পিছে" নাকি কি এক সাধারণ লংকান গানকে ভারতীয়রাই বিশ্বময় ভাইরাল করেছে । ভারতের পর্নোগ্রাফিক আইন এত শক্তিশালী হওয়া সত্বেও পর্ণ সাইটগুলোও দেখছি ভারতীয় ঐদিকেই যাচ্ছে। ঈশ্বরের দোহাই, কিছু করুন এজন্য।
বেশিরভাগ উপমহাদেশের ছেলেরা মেয়েদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ পায়নি। আমরা কখনই স্বাভাবিক ভাবে কথা বলিনি মেয়েদের সাথে এবং তাই তাদের কখনই জানতে পারিনি। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যথাযথ আচরণ, সম্মান, ভদ্রতার মতো সমস্ত জিনিস কখনও শেখানো বা কথা বলা হয়নি আমাদের ।
এই ধরনের ছেলেরা যখন ইন্টারনেটে যায়, তারা যা দেখে তা একই জিনিস। তারা প্রশংসা, সম্মান, ভালবাসা এবং মর্যাদার মতো জিনিস জানে না। তারা যা দেখতে পায় তা হল "একজন ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন করা"।
এটি শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে দেখা যায়, যেহেতু তাদের মধ্যে শুধু ভারতীয়দের হাতে ইন্টারনেট সহজলভ্য, তাই কিছু অপব্যবহার হওয়া স্বাভাবিক।
তবে একথা নির্বিধায় বলা যায়, ইন্টারনেট ব্যবহারে ভারত আরো শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরাশক্তি তে পরিণত হচ্ছে, যা ইতিমধ্যে কয়েক ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।
সূত্র, deccanherald.com/brandspot/pr-spot/what-do-indians-like-to-do-on-the-internet
মন্তব্যসমূহ