স্বাস্থ্যের কথা
দক্ষতা উন্নয়ন কি?
স্কিল ডেভেলপমেন্ট হল একটি ব্যক্তিগত অভ্যাস যা আপনার ক্যারিয়ারের পথকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
দক্ষতা উন্নয়ন বলতে ইচ্ছাকৃত, পদ্ধতিগত এবং টেকসই প্রচেষ্টার মাধ্যমে জটিল ক্রিয়াকলাপ বা কাজের কার্য সম্পাদন করার ক্ষমতা বিকাশের প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
দক্ষতা উন্নয়ন ধারণা (জ্ঞানগত দক্ষতা), জিনিস (প্রযুক্তিগত দক্ষতা), এবং/অথবা মানুষ (আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা) জড়িত কাজগুলি সফলভাবে সম্পন্ন করার অনুমতি দেয়।
সংক্ষেপে, এটি প্রথমে আপনার দক্ষতার ফাঁকগুলি সনাক্ত করার প্রক্রিয়া, এবং তারপরে এই দক্ষতাগুলি বিকাশ এবং সম্মানিত করা। আপনার কাছে থাকা দক্ষতার সেট আপনার কাজগুলি সফলভাবে সম্পাদন করার ক্ষমতা নির্ধারণ করবে, তাই সফলতার জন্য সঠিক টুলসেট পাওয়ার জন্য ফাঁকগুলি চিহ্নিত করা এবং সেগুলি পূরণ করার জন্য কাজ করা অপরিহার্য।
দক্ষতা অর্জনের কৌশলের গুরুত্ব কী
লক্ষ্য অর্জনে, আপনার দক্ষতা আপনার হাতিয়ার। আপনার জানা সঠিক দক্ষতা ছাড়া, আপনি কেবল নিজেকে হতাশ করবেন, মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন এবং জ্ঞান বা দক্ষতার অভাবের কারণে সৃষ্ট প্রাথমিক বাধাগুলির সাথে মোকাবিলা করার জন্য আপনার বেশিরভাগ প্রচেষ্টা ব্যয় করবেন।
অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যেকোন লক্ষ্য সাধনার অংশ, যাইহোক, যখন আপনার দক্ষতার সঠিক সেট না থাকে, তখন আপনি নিজেকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সংগ্রাম করতে দেখবেন। আরও খারাপ হল, সংগ্রামটি গঠনমূলক নয়, এবং আপনাকে এগিয়ে যেতে বাধা দেয়।
প্রতিষ্ঠানিক ভাবে, কর্মরত কর্মচারী উন্নয়ন এবং সেইসাথে কর্মচারী ধরে রাখার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে নিয়োগকর্তা এবং মানবসম্পদ পেশাদারদের কাছে এখন আগের চেয়ে আরও বেশি উন্নয়ন প্রশিক্ষণের বিকল্প রয়েছে। তিনটি প্রধান শেখার শৈলী আছে:
দক্ষতা ফাঁক সনাক্তকরণ
দক্ষতা উন্নয়ন: হার্ড এবং সফট স্কিল
দক্ষতা উন্নয়ন টিপস
কোন বিষয়ে আপনার কৌতূহল
যে বিষয় আপনাকে কৌতূহলী করে, সেটিই শিখতে চেষ্টা করুন। যা কিছুতে আমাদের ভালো লাগা বা ভালোবাসা কাজ করে, সেগুলোই আমরা দ্রুত শিখতে পারি। আর যেসব বিষয় খুব একটা টানে না, সেগুলো শিখতেও বেগ পেতে হয়।
নিজস্ব পছন্দনীয় বিষয় না থাকলে, তবে অন্যদের থেকে জানা উচিত। একে কেস স্টাডি বলে।
২. এক নৌকায় পা দিন
প্রতিটি দক্ষতা অর্জনেই বেশ পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়। তাই অনেকগুলো দক্ষতা অর্জনের প্রকল্প যদি আপনি একসঙ্গে নেন, তাহলে উল্লেখযোগ্য ফলাফল পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আর এ থেকে তৈরি হতে পারে হতাশা। তাই একটি দক্ষতা নিয়ে কাজ করুন। আপনার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু যদি হয় একাধিক বা আপনি একসঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান, তবে তার মধ্যে থেকে যেটা আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে, সেটি বেছে নিন। বাকিগুলো পরে শেখার জন্য একটি নোটবুকে টুকে রাখুন।
৩. কতটুকু শিখতে চান
একটি নির্দিষ্ট সময়ে কতটুকু শিখলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন? এই প্রশ্নের উত্তরটি আগেভাগে ঠিক করে রাখা ভালো। তাহলে বুঝতে পারবেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনি কতটুকু শিখতে চান। টাইপিংয়ের ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য হতে পারে, প্রথম ২০ ঘণ্টায় মিনিটে ১৫ শব্দ টাইপ করার দক্ষতা অর্জন। আবার ভাষা শেখার ক্ষেত্রে প্রথম ২০ ঘণ্টায় আপনার লক্ষ্য হতে পারে কিছু সহজ বাক্য গঠন।
৪. ভাগ করে ফেলুন
পুরো দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়াটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলুন। এরপর একবারে একটি বিষয়ে মনোযোগ দিন। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ‘কোনটা ছেড়ে কোনটা করব’—এই দ্বিধা আপনাকে আটকাতে পারবে না। ধরা যাক, আপনি একটি নতুন ভাষা শিখতে চান। এ ক্ষেত্রে আপনি পুরো ভাষা শেখার প্রক্রিয়াটিকে ভাগ করতে পারেন: বর্ণমালা, সংখ্যা, শব্দ, বাক্যগঠন বা ব্যাকরণ, শোনা, বলা, লেখা, পড়া ইত্যাদি। তারপর আপনার কাজ হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দক্ষতার প্রতি নজর দেওয়া।
৫. প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ
প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হাতের কাছে নিয়ে নিন। সাইকেল চালানো শিখতে চাইলে নিয়ে নিন একটি সাইকেল। ভাষা শিখতে চাইলে ভাষা শেখার বই বা অ্যাপ সংগ্রহ করুন। আবার যদি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখতে চান, তবে বন্দোবস্ত করুন বই, টিউটোরিয়াল আর একটি কম্পিউটারের।
৬. দূর করুন অনুশীলনের বাধা
অনুশীলনের সময় যেন প্রযুক্তি বা কোনো কিছু বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। টেলিভিশন, ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন যেন আপনার মনোযোগে ব্যাঘাত না ঘটায়, সে ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখুন। নিজের পরিবেশকে সাজিয়ে ফেলুন, যেন নিয়মিত অনুশীলন সহজ হয়ে যায়।
৭. সময় আলাদা করুন
নির্দিষ্ট একটি সময় অনুশীলনের অভ্যাস করুন। আপনি হয়তো ভাবছেন কী করে সময় বের করব? একটা নোটবুক নিন। রোজ কখন কী করলেন—সব টুকে রাখুন। দেখবেন অনেক কাজেই আপনার সময় ব্যয় হচ্ছে, যা তেমন প্রয়োজনীয় নয়। সেসব কাজ বাদ দিয়ে দিন। যে সময়টা বেঁচে যাবে, সে সময়টিকে কাজে লাগান নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য।
৮. আয়না দেখা
ভালো প্রতিফলন দেখতে পেলে আমরা সেই কাজটি আবার করতে চাই। টাইপিং শেখার সময় টাইপিং টেস্ট দিয়ে দেখুন আপনি কতটা দক্ষতা অর্জন করেছেন। কিংবা নতুন ভাষা শেখার সময় নিজের পড়ার বা বলার গতি রেকর্ড করে শুনুন। নিজের ব্যায়ামের পরিমাণ রেকর্ড করুন স্মার্টফোনের অ্যাপে।
৯. ঘড়ি ধরে অল্প করে
শুরুর দিকে একটা অসুবিধার সম্মুখীন হই আমরা। অল্প অনুশীলন করেই মনে হয়, আমি বুঝি অনেক পরিশ্রম করে ফেলেছি। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হলো, ঘড়ি ধরে অনুশীলন করা। স্টপওয়াচে ২০ মিনিট সময় নির্ধারণ করুন। এবার স্টপওয়াচ চালু করে টানা ২০ মিনিট অনুশীলন করে যান। এরপর বিরতি নিন। এভাবে রোজ মাত্র চার–পাঁচ ধাপে অনুশীলন করলে ভালো ফল পেতে পারেন।
১০. পরিমাণ ও গতিতে জোর দিন
শুরুর দিকে অনুশীলন নিখুঁত করার একটা প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এ থেকে আসতে পারে হতাশা। এই হতাশাকে কাটানোর জন্য মনোযোগ দিন অনুশীলনের পরিমাণের ওপর। হিসাব করে দেখুন, আপনার গতি কতটা বেড়েছে। আপনি কত কম সময়ে কতটুকু করতে পারছেন। মোটামুটি ভালো, অর্থাৎ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পারলে আপনার গতি বাড়িয়ে দিন
মন্তব্যসমূহ