স্বাস্থ্যকর প্রাত:রাশ
সকালে খাবার এড়িয়ে যাওয়া ক্ষতিকর কেন
প্রথম, আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায় , যা আপনার সরাসরি চিন্তা করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। "মস্তিষ্ক দক্ষতার সাথে চালানোর জন্য গ্লুকোজ ব্যবহার করে এবং যদি মস্তিষ্কের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত গ্লুকোজ না থাকে তবে আপনার শরীর ১০০ শতাংশ কাজ করে না।"
কম রক্তে শর্করার কারণে মানুষ খিটখিটে, বিভ্রান্ত এবং ক্লান্ত বোধ করে। শরীর কর্টিসলের উৎপাদন বাড়াতে শুরু করে, যার ফলে আমরা স্ট্রেসড এবং ক্ষুধার্ত থাকি । খাবার এড়িয়ে যাওয়া আপনার বিপাককে ধীর করে দিতে পারে, যা ওজন বাড়াতে পারে বা ওজন কমানো কঠিন করে তুলতে পারে। "যখন আপনি একটি খাবার এড়িয়ে যান বা না খেয়ে দীর্ঘ সময় যান, তখন আপনার শরীর বেঁচে থাকার মোডে চলে যায়।
প্রাতঃরাশের জন্য সেরা সময় কোনটি
সকালের নাস্তা হল দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। একটি স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ শুধুমাত্র দিন শুরু করার জন্য একটি পৃথক শক্তি সরবরাহ করে না, তবে বিপাককেও বাড়িয়ে তোলে, রক্তে শর্করার মাত্রাকে ভারসাম্যপূর্ণ করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করে।
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার ফলে মানসিক চাপ, ক্লান্তি এবং স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের সংবেদনশীলতার মতো বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাতঃরাশ এড়িয়ে চলা ক্ষুধার হরমোনগুলিকে বিভ্রান্ত করে, যার ফলে একজন ব্যক্তি দিনের পরে অতিরিক্ত খাওয়ার কারণ হয়। অনেক লোক ঘুমানোর আগে মরিয়া ক্ষুধার্ত বোধ করে কারণ তারা দিনের আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে খায়নি এবং তাদের শরীর ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করছে।
ইউরোপে কেন মুইসলি এবং গ্রানোলা ভাল ব্রেকফাস্ট!
গ্রানোলা এবং মুয়েসলি উভয়ই প্রাতঃরাশের জন্য স্বাস্থ্যকর পছন্দ। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে এবং তারা উভয়ই প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
মুয়েসলি ও গ্রানোলা কী সত্যিই স্বাস্থ্যকর প্রাতঃ রাশ!!!
বাংলাদেশী ব্রেকফাস্ট
সকালটা ভালভাবে শুরু করার করার জন্য খাদ্য ও পানীয় দুটিরই প্রয়োজন রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশী ব্রেকফাস্ট রেসিপির অভাব রয়েছে এদেশে। প্রাতঃরাশে, বাংলাদেশিরা ভাজি (মিশ্র সবজি), মসুর ডাল বা ভাজা ডিম সহ পরাটা বা রুটি সহ হালকা আইটেম খান। একই সময়ে, লোকেরা হোটেলগুলোতে সকালের নাস্তায় রুটির সাথে নেহারি পছন্দ করেন । সকালের নাস্তার সাথে চা খাওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার এখানে। তবে দিনের শুরুতে শ্রেষ্ঠ পানীয় নিয়ে বেশ মতভেদ আছে।
দিনের প্রথম পানীয় কি হওয়া উচিত? »
সকালের নাস্তায় লুচি কিংবা পরোটা না হলেই চলে না, এমন অভ্যাস থাকলে অনেকের । কিন্তু ময়দায় ফাইবার থাকে কম আর এতে ফ্যাট জমার সম্ভাবনাও থাকে অনেক বেশি। তার চেয়ে বরং দুধ আর ওটস খান। এতে পেটও যেমন ভরবে, পুষ্টিগুণও বাড়বে।
অনেকেই সকালের নাস্তায় টোস্ট আর কফি পছন্দ করেন। ময়দা কিংবা কফি কোনোটাই স্বাস্থের জন্য উপকারী নয়। টোস্ট কিংবা পাউরুটি হজমের সৃষ্টি করার পাশাপাশি দেহের ফ্যাট বাড়ায়। একান্তই যদি খেতে চান তবে ব্রাউন ব্রেড বেছে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন পাউরুটিতে লো ফ্যাটের অল্প মাখন মেখে খেতে পারেন সকালের নাস্তায়।
কোরাইশুটির কচুরি। লুচি আর আলুর দম। মোগলাই পরোটা। ঘুগনি। পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালিদের জনপ্রিয় ব্রেকফাস্ট রেসিপি। কিন্তু এগুলো ভীষণ মুখরোচক হলেও একটি স্বাস্থ্যকর ভরাট ব্রেকফাস্ট নয়।
একটি সাধারণ বাংলাদেশী সকালের নাস্তা কি?
একটি সাধারণ বাংলাদেশী প্রাতঃরাশের মধ্যে থাকে রূটি বা পরাঠা, তরকারি, রান্না করা শাকসবজি, মিষ্টি ইত্যাদির সাথে খাওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য ভাত, তাই মাঝে মাঝে সকালের নাস্তায়ও খাওয়া হয়।
ব্যাচেলেরদের জন্য প্রাতঃ রাশ :
মেস বা হোস্টেলে থাকা মেধাবী ছাত্রদের প্রাতঃ রাশসকালের নাস্তা বলতে ১০/১১টার দিকে ক্যান্টিনের সিঙ্গারা কিংবা ডিম চপ। কিন্তু এই খাবারই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় অনেকের জন্য। যাদের ব্যস্ততা বেশি কিংবা রান্না জোগাড়ের আয়োজন কম , তাদের জন্য পান্তাভাতের সাথে ডাল ভর্তা বা ডিম ভালো রেসিপি হতে পারে। ব্যাচেলরদের জন্য নিম্নলিখিত আইটেম গুলো মন্দ নয়।
- ডিম। ডিম একটি সহজ, পুষ্টিকর ব্রেকফাস্ট । তবে এর সাথে হাল্কা কার্বোহাইড্রেট হিসেবে সম্পূর্ণ শষ্য পাউরুটি।
- দই। আপনি যদি দ্রুত প্রাতঃরাশ খুঁজছেন তবে দই, চিড়া একটি দুর্দান্ত বিকল্প। দৈয়ের হুই প্রোটিন, চিড়ার শর্করা ভালো মিশ্রণ হজমের জন্য।
- কফি। যদিও জল উত্তম পানীয় কিন্তু কফি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। অম্বল আছে যাদের তাদের এটি বর্জন করা উচিত।
- ওটমিল।
- চিয়া বীজ।
- পূর্ন গমের টোস্ট বা পাউরুটি।
- গমের নুডুলস, বা চালের নুডলস।
এগুলো প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট এর সংমিশ্রণ। ভরাট অনুভূতি, এন্টি অক্সিডেন্ট ও শক্তির উৎস হিসেবে সারাটা দিন ক্লান্তিহীন রাখতে সহায়ক।
স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ
একটি সুষম ভারসাম্যপূর্ণ প্রাতঃরাশ পাঁচটি খাদ্য গ্রুপের মধ্যে অন্তত তিনটির খাবার অন্তর্ভুক্ত করে। পুরো শস্যের রুটি এবং সিরিয়াল; কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য এবং ফল হল প্রাতঃরাশের সেরা পছন্দ। গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রাতঃরাশের মধ্যে একটি চর্বিহীন প্রোটিন খাবার এবং গোটা শস্যের একটি পরিবেশন স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আজ আপনার সকাল শুরু করার জন্য ১টি স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট রেসিপি দেয়ার চেষ্টা করব।
স্বাস্থ্যকর রেসিপিগুলি আপনার সকালকে আগের চেয়ে আরও আনন্দদায়ক করে তুলতে পারে। সকালটা শুরু হয় তাড়াহুড়া করে। তাই বলে আগের রাতে ঠিক করতে হয় প্রাতরাশ। এখানে কয়েকটি খাবার রয়েছে যা খালি পেটে খাওয়ার জন্য সেরা, তারা সর্বাধিক উপকার দেয় একটি ভাল দিন শুরুর জন্য:
অস্বাস্থ্যকর প্রাতঃ রাশ কোনগুলো!!!
উষ্ণ জল এবং মধু
উষ্ণ জল এবং মধুর পানীয়কে খুব ভোরে পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও মধু খনিজ, ভিটামিন, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং এনজাইম দ্বারা লোড হয় যা অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে দায়ী, এটি উষ্ণ জলের সাথে মিশ্রিত টক্সিনগুলিকে বের করে দিতে সাহায্য করে। আমাদের রন্ধনপ্রণালী স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর রেসিপিতে পূর্ণ। রুটি, পরাটা, বাদামি চালের ভাত বা খিঁচুড়ি হল কয়েকটি উদাহরণ। রেসিপিগুলি কঠিন কিছু নয়। ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের সকালের নাস্তা এক নয়। অনেক জেলার মানুষ সকালে শুধু চা, মুড়ি খেয়ে কাজে যায়। কোথাও চায়ের সাথে পরাটা বেশ চলে। কিন্তু এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও মিনারেলস বিহীন নাস্তা। আপনার সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকলেও, আপনার শরীরের জন্য সকালে একটি ভরাট খাবার প্রাপ্য। তেমন একটি রেসিপি হল, পুরো-গমের রুটি বা ওটস, একটি ডিম, এক গ্লাস দুধ এবং ফল যেমন কলা বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের জন্য একটি ভাল শক্তিশালী ব্রেকফাস্ট । রুটি, ফল এবং এক গ্লাস দুধ সহ যে কোনও মৌসুমী সবজি একটি স্বাস্থ্যকর 'দেশি' সকালের নাস্তাও বটে।পান্তাভাত »
পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশ জুড়ে জনপ্রিয়, এই খাবারটি গাঁজানো ভাত দিয়ে তৈরি এবং সরিষার তেল, পেঁয়াজ, মরিচ বা আলু ভর্তা দিয়ে খাওয়া হয়।
মেয়েদের জন্য প্রাতঃরাশ :
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়া দ্রুত স্কুল যাওয়া কিশোর কিশোরী ও নারীদের মধ্যে একটি সাধারণ অভ্যাস। এটি ভগ্ন স্বাস্থ্য ও ক্লান্তির জন্য দায়ী।- ডিম,
- মাছ.
- কালো চকলেট.
- আখরোট.
- রসুন,
- জলপাই তেল.
- আপেল
- ওটমিল।
সকালের নাস্তায় দুধ কি ভালো?
সূত্র, হেলথ সায়েন্স, বিবিসি ফুডস,
মন্তব্যসমূহ